
বিছানায় সিজিএলের একটা বই মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। একখানা সিএফএল জ্বলছে আর রংচটা পাজামা পরে, একটা আলোআঁধারি ঘরে তিনজন চুপ করে বসে আছে। বাকি সব ঘরগুলো অন্ধকার। দুজন বাড়ি গেছে। শঙ্কর তবুও দূর দিগন্তে রিখটার্সভেল্ড পর্বতশ্রেণীর নিশানা পেয়েছিল, কিন্তু এরা কোনো দিকেই চাকরির কোন সম্ভাবনাটুকুও পায়না। হুড়োহুড়ি করে চাকরি খোঁজার মত অভাব ওদের নেই। তবুও বাড়ি থেকে প্রত্যাশার চাপ প্রচন্ড। ডিসেম্বরটাও প্রায় শেষ। যখন তখন ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। শীত পড়েছে জাঁকিয়ে। তার মধ্যে আবার ঠিক সন্ধ্যে নাগাদ রাজুদার ঘর থেকে তার ঝুলন্ত লাশটা উদ্ধার হয়েছে। রাজুদার মা মারা গেছেন বহু বছর আগে। তার বাবার চাকরি নেই। এই মেসটা থেকেই যা আয়, তা দিয়ে বাবা-ছেলের ভালোই চলে যেত। রাজুদা'কে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলতে দেখে ওর বাবা একটুও কাঁদেনি। অদ্ভুত ভাবে ঘোর লেগে ভ্যাবাচাকা খেয়ে থমকে গেছে। আজ মঙ্গলবার। মাংসবার। কিন্তু দুর্ঘটনার পরে আর মাংস খাওয়ার ইচ্ছে হল না কারোরই। এদিকে সুযোগ বুঝে রান্নার মাসিও ডুব দিয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে পাড়ার রুটির দোকানটা বন্ধ। পুঁজি বলতে অল্প চানাচুর পড়ে আছে। রাজুদার কথাগুলো বারবার মনে পড়ে। সে বলত, শোন ভাই.. ...